বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন ও শিক্ষার্থীদের মিলনস্থল “ইউনাইটেড ন্যাশন্স ইউথ এন্ড স্টুডেন্টস্ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ” (ইউনিস্যাব) রাজশাহী ডিভিশনের উদ্যোগে ১ নভেম্বর ২০২৪ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হলো তৃতীয়বারের মতো “ট্যালেন্ট হান্ট ৩.০”।
এক মাসব্যাপী আয়োজনে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তাদের সৃজনশীল ও প্রতিযোগিতামূলক দক্ষতা প্রদর্শন করেন। উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সহ আরও অনেকেই। প্রতিযোগিতায় প্রাথমিক পর্যায়ে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনলাইন মাধ্যমে তাদের কাজ জমা দেয় গত ২৬ অক্টোবর এবং সেখান থেকে সেরা ১০ অংশগ্রহণকারীদের ফাইনাল রাউন্ডে নির্বাচন করা হয়।

তারপর বহুল প্রতীক্ষার শেষে ১ নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০ থেকে এক চরম উত্তেজনা নিয়ে শুরু হয় প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ড। যেখানে প্রবলেম সলভিং, স্লাইড মেকিং, ইনোভেটিভ পোস্টার ডিজাইন এবং কনটেন্ট রাইটিং। বিচারকদের সিদ্ধান্তে প্রতি সেগমেন্টে সেরা তিন প্রতিযোগীকে বাছাই করা হয়। দুপুর ১২:৩০টায় বিরতির পর বিকেল ৩টায় আয়োজন করা হয় পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান, যা ছিল পুরো দিনের প্রধান আকর্ষণ।
রাজশাহী বিভাগের তরুণ মেধাবীদের নিয়ে এই দিনব্যাপী ইভেন্টে ছিল সৃজনশীলতা আর প্রতিযোগিতার উদযাপন।জাতীয় সঙ্গীত এর মাধমে শুরু হয় বিকালের অনুষ্ঠান তারপর প্রধান অতিথি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. মোঃ আমিরুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, “ট্যালেন্ট হান্ট ৩.০-তে আমরা নতুন প্রজন্মের সৃজনশীলতা ও সম্ভাবনার উজ্জ্বল দিক দেখতে পাই।” এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ জহুরুল আনিস, তিনি উনার নিজেদের জীবনের মূল্যবান অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করেন এবং প্রতিভা উন্নয়নে উৎসাহ দেন।
এছাড়াও ইউনিসাব রাজশাহী বিভাগের রিজিওনাল সেক্রেটারি আক্তারুজ্জামান বাবু তাঁর বক্তবে বলেন, “ট্যালেন্ট হান্ট ৩.০” এর মতো উদ্যোগ তরুণ প্রজন্মকে নতুন উদ্যমে সামনে এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা যোগাবে এটাই কামনা করি। তারপর ডেপুটি রিজিওনাল সেক্রেটারি এমডি. ইয়াছিন আরাফাত এর সহযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান শেষে সব প্রতিযোগী এবং বিচারকদের সাথে ফটোসেশন অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় এ প্রোগ্রামের সমাপ্তি ঘটে এবং উপস্থিত সবাই স্মৃতিময় একটি দিন নিয়ে বাড়ি ফিরে।

অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হলেও প্রতিযোগীদের মধ্যে এক ধরনের গর্ব ও উচ্ছ্বাস স্পষ্ট ছিল। বিজয়ীরা তাদের প্রাপ্ত সম্মাননার মাধ্যমে যেমন নিজের মেধার স্বীকৃতি পেল, তেমনি যারা পুরস্কার অর্জন করতে পারেনি, তারাও নিজেদের উন্নতির নতুন দিক আবিষ্কার করল। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা বাস্তব জ্ঞান, উপস্থাপনা দক্ষতা এবং নিজেদের চিন্তাশক্তি প্রয়োগের মূল্য সম্পর্কে সচেতন হলো।
ইউনিস্যাব রাজশাহী বিভাগ এই আয়োজনের মাধ্যমে আবারও প্রমাণ করেছে, তাদের লক্ষ্য শুধু মেধার সন্ধান করা নয়, বরং শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিত্ব ও দক্ষতা বিকাশে সহায়তা করা। আগামী বছর আরও বৃহৎ পরিসরে “ট্যালেন্ট হান্ট ৪.০” আয়োজনের ইঙ্গিত দিয়ে তারা এই ইভেন্টটির পরিসমাপ্তি ঘোষণা করে।