বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠানের ন্যায় সরকারি এ ব্যাংকেও অনিয়ম-দূর্নীতি ও দলীয়করণের লীলাভূমিতে পরিণত হয়েছে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসি (বিডিবিএল) এ আওয়ামীলীগের দোসররা এখনো রয়েছে বহাল তবিয়তে।
বিডিবিএল এর ডিএমডি জনাব শচীন্দ্র নাথ সমাদ্দার যিনি বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি এবং সদ্য অবসরপ্রাপ্ত ডিএমডি জনাব পরিতোষ সরকার স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ বিডিবিএল শাখার উপদেষ্টা (জুলাই গনহত্যা মামলার আসামী) এবং ব্যাংকের অবসর প্রাপ্ত জিএম (বঙ্গবন্ধু পরিষদের উপদেষ্টা) পতিত চন্দ্র বারিকের নেতৃত্বে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়মিত পদোন্নতি বাণিজ্য চলছে।
সেইসাথে ভাইভা বোর্ডের সদস্য জনাব শচীন্দ্র নাথ সমাদ্দার মাধ্যমে সিনিয়র কর্মকর্তাদের ভাইভায় অসংলগ্ন প্রশ্ন করে ফেল করানো, নম্বর কম দিয়ে পদোন্নতি বঞ্চিত করে আওয়ামী নেতাদের পদোন্নতি ব্যবস্থা করা এখনো চলছে বলেও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা জানান, ”৫আগস্ট পরবর্তী সব সংগঠন ব্যাংকে স্থবির হলেও তাদের সহযোগিতা করছে অফিসার্স এসোসিয়েশনের আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তারা। বর্তমান অফিসার্স এসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কমিটির উল্লেখযোগ্য পদে রয়েছেন। তাদের মধ্যে এসোসিয়েশন সভাপতি, মোঃ ইকবাল হোসেন (বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি), এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম রাকিব (স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদ ও সমাজকল্যাণ পরিষদের কার্যকরী সদস্য), দুই সহ-সভাপতি মোঃ সালেহ উদ্দিন মাহমুদ সৈকত, মোঃ নুর উদ্দিন চৌধুরী (যথাক্রমে সমাজকল্যাণ পরিষদের সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক), দুই যুগ্ম-সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনির ও মোঃ মাহবুবুল করিম ভূঁইয়া (টিটু) যথাক্রমে স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের সভাপতি ও সহ-সভাপতি অন্যতম”। এছাড়া, এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মনোয়ার হোসেন, স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, এসোসিয়েশন দপ্তর সম্পাদক দিপংকর বিশ্বাস ও ক্রীড়া সম্পাদক জান্নাতুল বাকী দুজনেই স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক।
অন্য একজন ব্যাংক কর্মকর্তা জানান ”দেশ থেকে ফ্যাসিবাদ বিতাড়িত হলেও এই ব্যাংকে আওয়ামীপন্তীদের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে অফিসার এসোসিয়েশন নামে, যার গডফাদার হলেন সদ্য অবসরপ্রাপ্ত ডিএমডি পরিতোষ সরকার । এমনকি ৫ আগস্টের পর ব্যাংকে আওয়ামীপন্ত্রী কর্মকর্তাদের পুর্নবাসন করা হচ্ছে। নিয়মিত এমডি না থাকার সুযোগে বিডিবিএল-এর আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তাদের নিজ নিজ সুবিধামতো স্থানে পদায়ন করেছেন এবং তাদের অপরাধের সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার নীল নকশা বাস্তবায়ন করছেন।” এ থেকে ব্যাংকের সর্বস্তরের কর্মকর্তারা মুক্তি চায় এবং তিনি বৈষম্য মুক্ত বিডিবিএল গঠনের দাবী জানান।